শ্রীকান্ত পাত্র, সাংবাদিক, ঘাটাল:
রাজ্যের সমস্ত জবকার্ড হোল্ডারদের নতুন করে কেওয়াইসি
করতে হবে। এমনই নির্দেশিকা
রাজ্যকে পাঠিয়েছে কেন্দ্র।
রাজ্যের তরফে জেলাশাসকদের এই কাজ দ্রুত
সেরে ফেলার নির্দেশ আসার পরই একশো
দিনের কাজ ফের শুরু
হওয়ার জল্পনা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয়
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত
জব কার্ড হোল্ডারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে জব কার্ড নম্বর
ও আধার নম্বর যোগ
করতে হবে। সঙ্গে জবকার্ড
হোল্ডারের চোখের মণি-সহ মুখের
ছবি যোগ করতে হবে।
এই ইকেওয়াইসি-র কাজ শেষ
করে ফেলতে হবে ৩১ অক্টোবরের
মধ্যে। একশো দিনের কাজ ঘিরে কেন্দ্ররাজ্য
টানাপোড়েন এখনও অব্যাহত। কলকাতা
হাই কোর্ট এ নিয়ে সুস্পষ্ট
নির্দেশ দিয়ে আগেই জানিয়েছে, একশো
দিনের কাজ আটকে রাখা
যাবে না। রাজ্যের মানুষ
যাতে বঞ্চিত না হন তা-
ও নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রকে।
আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র
কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে বারবার অভিযোগ
তুলেছে রাজ্য প্রশাসন। বকেয়া টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয়
সরকার। যদিও রাজ্য সরকার
নিজের ভাঁড়ার থেকেই একশো দিনের কাজের
টাকা শ্রমিকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এবার জব কার্ড
হোল্ডারদের ইকেওয়াইসি করার নির্দেশিকা আসায়
স্বাভাবিকভাবেই একশো দিনের কাজ
করেন যাঁরা, তাঁরা ফের নতুন করে
আশায় বুক বেঁধেছেন। সূত্রের
খবর, গত ৯ অক্টোবর
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক জেলার সমস্ত বিডিওদের একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে
দ্রুত জবকার্ড হোল্ডারদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ই-কেওয়াইসি আপডেট
করতে বলেছেন। এই কাজের জন্য
গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীদের ১৩ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর
পর্যন্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজও শুরু করে
দিয়েছেন বিডিওরা। এই তৎপরতা নিয়ে
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য
সৌমিত্র সিংহরায় বলেন, "কেন জবকার্ড হোল্ডারদের
ই-কেওয়াইসি করতে বলা হয়েছে,
তা আমরা এখনও জানতে
পারিনি। তবে কেন্দ্র থেকে
নির্দেশিকা এসেছে। তাই মনে হচ্ছে,
ফের জব কার্ডের কাজ
শুরু হতে পারে।" জানা
গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় জব কার্ড হোল্ডার
রয়েছেন ১ কোটি ৭৭
লক্ষ তিন হাজার ৫৭১
জন। গত ১৭ অক্টোবর
পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট
বলছে, আধার লিঙ্ক করা
হয়েছে ১ কোটি ৭৭
লক্ষ তিন হাজার ৩১৪
জনের। রিপোর্ট বলছে, জবকার্ডের সঙ্গে ই-কেওয়াইসি হয়েছে
মাত্র ২ লক্ষ ৬৫
হাজার ৯১৯ জনের। শতকরা
হিসাবে জেলায় মাত্র ১৫ শতাংশ কাজ
হয়েছে। সবথেকে বেশি ই-কেওয়াইসি হয়েছে দাঁতন এক নম্বর ব্লকে।
এই ব্লকে জবকার্ড হোল্ডারের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৭২৫।
ই-কেওয়াইসি হয়েছে ৩৩ হাজার ৭২
জনের। শতকরা হিসাব ৪৪.২৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সবং ব্লক (২৬.৫২ শতাংশ)।
সবচেয়ে পিছিয়ে নারায়ণগড় ব্লক। এই ব্লকে মাত্র
৩.৮৭ শতাংশ ই-কেওয়াইসি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের দাবি,
গত ১৭ অক্টোবরের পর
কাজ শুরু হয়েছে। জেলায়
গড় বেড়ে হয়েছে ২২
শতাংশ। ধীর গতির জন্য
ইন্টারনেটের গতিকেইকে দায়ী করছেন বিডিওরা।
দাসপুর দুই নম্বর ব্লকে
ই-কেওয়াইসি হয়েছে ২৯ শতাংশ। দাসপুর
দুই নম্বর ব্লকের বিডিও প্রবীরকুমার শীট বলেন, "ইন্টারনেট
খুব শ্লো। ফলে খুব ধীর
গতিতে চলছে কাজ। নির্দিষ্ট
সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে
বলে মনে হয় না।"
ঘাটাল ব্লকের সুলতানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৌশিক জানা বলেন, "প্রায়
৯ হাজার জবকার্ড রয়েছে। কাজ চলছে খুব
ধীর গতিতে।
খবরটি সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় আজ ২৪ অক্টোবর প্রকাশিত।
