প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি ও শাসকদল, কী ভাবছেন সাধারণ মানুষ!

কলমে: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড: শিবাজী বসু:- শুরুটা করা যাক ইতালির বিশিষ্ট রাষ্ট্র দার্শনিক নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি(১৪৬৯-১৫২৭) র কথা দিয়ে। তিনি তাঁর ‘The Prince’ বইতে লিখেছেন, সাধারণ মানুষ কি কথা দিয়ে কথা রাখেতাহলে তাঁদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনৈতিক নেতারাই বা কথা রাখবেন কেনসম্প্রতিকের আয়নায় এই বই পড়লে দেখা যাবে ৫৫৬ বছর আগের এই ভবিষ্যৎ বাণী কেমন যেন আজকের ভোট রাজনীতিতে বাস্তব হয়ে ঝলমল করছে। তিনি আরও লিখেছেন, একদল অগ্রণী মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান, মানুষের কাজ করতে চান এবং মানুষের কল্যাণের জন্য এ দল থেকে ও দলে, ও দল থেকে সে দলে ছুটোছুটি করছেন। অগ্রণী মানুষ রূপী এই  নেতাদের এই কপট চাল ধরা সাধারণ মানুষের অসাধ্য। নেতা বা শাসককে কেমন হতে হবে? ম্যাকিয়েভেলি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লিখেছেন, The ruler should appear a man of compassion. নেতা বা শাসকের সঙ্গে কথা বলে বা তাঁর সান্নিধ্যে গিয়ে সাধারণ মানুষের যেন মনে হয়, আহা…, কী দয়া মানুষটির মনে। সাধারণ মানুষের মঙ্গল কামনা করেন এই মানুষটি। এতদিনে একজন নেতা পেয়েছি বটে! যিনি সত্যিই বোঝেন গরীব মানুষের দুঃখ কষ্ট। কিন্তু শুধু কি দয়া হলেই হল? ম্যাকিয়েভেলী জানিয়েছেন, ভালো নেতাকে হতে হবে চতুর অভিনেতা। তাঁকে অভিনয় করতে হবে 'man of faith' Man of faith' মানে হল যাকে বিশ্বাস করা যায়। সাধারণ মানুষ মানে আম পাবলিক যাকে বিশ্বাস করে ক্ষমতার শীর্ষে বসাবে। ক্ষমতায় বসে সত্যি সত্যিই মানুষের কথা ভাববেন, মানুষের জন্য সত্যিই অনেক কাজ করবেন। নিজের পাতে ঝোল না টেনে মানুষের পাতে ঝোল দিবেন। তিনি আরও লিখেছেন, আদর্শ নেতা বা শাসক ভান করবে মানুষকে ভালবাসার 'a man of good faith  ' এবং a man of integrity ' হওয়ার। ভেবে দেখুন শাসক বা নেতাকে কত বড় অভিনেতা হতে বলেছেন ম্যাকিযাভেলি। যাতে সাধারণ মানুষ নেতার অখন্ড সততায় বিশ্বাস করে সহজেই। মানুষটি যে আসলে ধুরন্ধর, চতুর, কপট মিথ্যাচারী তা যেন সাধারণ মানুষ বুঝতে না পারে। মিলিয়ে দেখুন তো আজকের এই ৫৫৬ বছর আগে ম্যাকিয়াভেলির কথাগুলো মিলছে কী না ! কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের নেতা নেত্রীদের ক্ষেত্রে ওই বয়ানগুলি কি মিলছেএই বয়ানের আলোকে এবারের প্রতিবেদনে ফুটে উঠবে ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি ও শাসকদল’ কী ভাবছেন সাধারণ মানুষবলে রাখি রাষ্ট্র দার্শনিক গণিতবিদ আইনজ্ঞ সুপন্ডিত নিকোলো ইতালি দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। ফলে খুব কাছ থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন একইভাবে একেবারে সাধারণ মানুষকেও বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। ফলে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে একইভাবে একেবারে সাধারণ মানুষের প্রকৃতি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন করতে পেরেছেন। সেই ৫৫৬ বছর আগে রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী মানুষ আর সাধারণ মানুষ সম্বন্ধে যে বিশ্লেষণ করে গিয়েছেন ম্যাকিয়াভেলী তা আজও কেমন প্রযোজ্য তা ভাবলে অবাক হতে হয়। রাজ্য বা রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতাকে যেমন অভিনেতার মতো আচরণ করতে লক্ষ্য করেছেন ঠিক একই ভাবে সাধারণ মানুষকে ' হতছাড়া জীব' বলে মনে করেছেন তিনি। তিনি মনে করতেন সরকারের প্রকৃতি ও সমাজের গঠন অনেকটা নির্ভর করে মানুষের প্রকৃতির উপর। আসলে মানুষ বোকা এবং কোনও প্রকার যুক্তি স্বীকার করতে চায় না। ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা সব মানুষের নেই। মরীচিকার পিছনে দৌড়াতে তারা ব্যস্ত। তিনি ঠিক কী বলেছেন এই বিষয়ে তা হুবহু তুলে ধরছি। ‘The Prince’ বইতে লিখেছেন, ‘People often deceived by an illusive good, desire their own ruin ... unless they're directed by superior men they're apt to be contrary to all reason’ . তাঁর মতে মানুষ মাত্রই স্বার্থপর ও লোভী। মানুষ নিজের জন্য কিছু পেলেই সে সন্তুষ্ট। মানুষের এই চরিত্র বুঝেই রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা প্রকাশ্যে অভিনেতা সাজেন, দরদী ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি তাদের  সিংহ ও শেয়ালের তুলনা টেনেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘He learns from the fox and lion'. আসলে নেতারা সিংহ ও শেয়ালকে তাঁদের মাষ্টারমশাই এর আসনে বসিয়েছেন। প্রশ্ন হল এই যে মানুষের জন্য দরদ ও ভালোবাসা দেখিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা, ক্ষমতায় আসীন হলে কী রূপ ধারণ করেন নেতা ও শাসক ? তিনি বলেছেন, দুভাবে শাসন করা যায়। সভ্য মানুষের মতো ও অসভ্য জানোয়ারের মতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা জানোয়ারের শাসন করতে চায়। এই যে মানুষের জন্য দরদ ও ভালবাসার কথা বলে ক্ষমতায় আসা সেই কথা বা প্রতিশ্রুতি ভুলে গেলেন তিনি বলেন, রাজনৈতিক দর্শনের এটাই তো গোড়ার কথা। নেতারা উপরে উপরে ভালবাসার ভান করবেন কিন্তু ভিতরে ভিতরে সাধারণ মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করতেই হবে। তা না হলে শাসন করবেন কী করে? মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে পারলে তার কাছে কোনও প্রতিশ্রুতিরই দাম নেই। সাধারণ মানুষ হতচ্ছাড়া জীব। তারা কি কথা দিয়ে কথা রাখেতাঁদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেতারাই বা কথা রাখবেন কেন কিন্তু একটা জরুরী কথা বলে গিয়েছেন তিনি। শাসক নেতাদের মুখে যেন ধর্মের কথা থাকে। রাজনীতির সঙ্গে ঠিক পরিমাণে ধর্ম মেশাতে পারলেই শাসন করা সহজ হয়। আমাদের নেতা বা শাসক ধর্মপ্রাণ বা ধর্মভীরুএসব সাধারণ মানুষ ভীষণ খায়। নেতা কর্মীরা কথায় কথায় ধর্মের কথা বলছেন মানেই মানুষটি সত্যিই ভালো ও দয়ালু। তাঁর দাঁত নেই, নখ নেই, সিং নেই। শুধু আছে দয়া মায়া ভালোবাসা। ম্যাকিযাভেলী বলেছেন শাসকরা সাধারনত সাধারণ মানুষকে তুচ্ছ ও জঘন্য জীব বলে মনে করেন। যেভাবে তিনি সাধারণ মানুষ ও শাসকের চরিত্র বিশ্লেষণ করে গিয়েছেন আমি মনে করি আজও তা প্রযোজ্য। তা না হলে সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা বলে কীভাবে এত পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি করতে সাহস পায়  শাসক দল  ? বঙ্গদেশে দুর্নীতির মাত্রা এতটাই যে দুর্নীতি আর শাসকদল যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তৃণমূল কংগ্রেস দলটিকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম রাজনৈতিক দল বলতে শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। এর সমর্থনে কী যুক্তি রয়েছে ? আসছি পরের অংশে। এটা সত্য, দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন হয় না। একেবারে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের নজিরও নেই এই বিশ্বে। এমনকি প্রাচীন যুগেও রামায়ণ মহাভারত আমলে দুর্নীতির অস্তিত্ব ছিল বলে তার বহু প্রমাণ রয়েছে। কেননা, প্রাচীন যুগে বেদ উপনিষদ যুগ থেকে শুরু করে গুপ্ত ও মৌর্য যুগেও দুর্নীতি আর অনিয়ম বেনিয়ম রুখতে দণ্ড দানের ব্যবস্থা ছিল। সেই দুর্নীতির ধারা আজও সমানে চলছে। তার নজির মিলেছে বিভিন্ন দেশ বিদেশের প্রাচীন গ্রন্থে। আধুনিক যুগে যেন সভ্য সমাজের মানুষ আরও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও দুর্নীতি বেণীয়ম মাত্রা লাগাম ছাড়িয়েছে। কোথাও আবার দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তার নজির আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। স্বাধীনতার পর জাতীয় কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট রাজ্য সরকার চালিয়েছে। এই দুই আমলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেনি এমনটা নয়, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত হয়েছে এমনকি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই দুই আমলে দুর্নীতি আর বেনিয়োম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেনি। সরকারের একেবারে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমনতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেনি। নিয়োগ দুর্নীতি তো বটেই সরকারের এমন কোনও দফতর নেই যেখানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেনি। নাম কা ওয়াস্তে দুর্নীতির তদন্ত হয়েছে বা তদন্তের নামে দুর্নীতিকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে একেবারে শীর্ষ স্তর দুর্নীতিতে জড়িত নেতা নেত্রীরা এমনকি সরকারি কর্মচারী ও আমলারা। এমনটাই দাবি করছেন বিরোধী দলগুলির। অভিযোগ উঠলে তদন্ত হবে না কেন? বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। বামেদের অভিযোগ বাম শাসন হটাতে তৃণমূল নেত্রী সীমাহীন শঠতার আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই শঠতা ধরতে পারেনি রাজ্যের সাধারণ মানুষ। মেকিয়াভেলির বয়ান অনুযায়ী নেত্রী অভিনয়ে দক্ষতা দেখিয়ে রাজ্যের মানুষকে বিমোহিত করতে পেরেছিলেন। তার ফল স্বরূপ রাজ্যের ক্ষমতা দখল। মেকিয়াভেলির ভাষায় বলা যায়, ‘she was appeared a woman of compassion’. মমতার অভিনয় ও মিথ্যাচার ধরতে পারেনি সাধারণ মানুষ। ক্ষমতায় বসার পর যে দুর্নীতি নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল রাজ্যে রাজনীতি তা হোল ত্রিফলা ল্যাম্প কেলেঙ্কারি। তারপর একে একে নীল সাদা রঙ কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে নিয়োগ দুর্নীতি (যে কোনও দফতরে) বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি সে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ শিক্ষক, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সীমাহীন শঠতার আর দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ সরকার থেকে শাসকদল। কোনও অভিযোগের তদন্ত হয়েছে? লোক দেখানো তদন্ত শুরু করে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ সহ রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। কার নির্দেশে এমন হয়? সরাসরি অভিযোগের তীর উঠেছে সরকার ও দলের শীর্ষ নেতা নেত্রীর দিকেই। এই যে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের মতো দুর্নীতি প্রকাশ্যে এলেও তার কি তদন্ত করেছে রাজ্য সরকার? উল্টে রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট করে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অযোগ্যদের পাশে থাকার আস্বাস দিচ্ছেন। প্রশ্ন হল শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর কেন তদন্ত শুরু করলো না? কেন আদালতের দ্বারস্থ হতে হলো অভিযোগকারীদের? এতে পরিষ্কার যে, কোনও উদ্দেশ্য না থাকলে অভিযোগের তদন্ত করলো না কেন রাজ্য সরকারশিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সহ প্রায় গোটা শিক্ষা বিভাগের কর্তারা। তার দায় কি এড়াতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীএটাই তো প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। এই সরকারের কাজকর্ম নিয়ে বিশ্লেষণ করলে মেকিযাভেলির তত্ত্ব সামনে আসবেই। ক্ষমতা দখলের পর সরকারি কোষাগারকে নিজের পিতৃ সম্পত্তি ভেবে জমিদারদের মতো যেভাবে অর্থ বিলি করে চলেছেন তার ফল ভুগতে হবে রাজ্যের আম জনতাকে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে রাজ্যে কার্যত নীরব সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসকদল। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কি মেলিয়াভেলির কাছে রাজনীতির পাঠ নিয়েছিলেন? তাঁর কাজকর্ম মেকিযাভেলিকেই মনে করিয়ে দেয়। এই মুহুর্তে আমার মনে পড়ছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কথা। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী রাজনীতির পাঠ নিয়েছিলেন পৃথিবী খ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক হ্যারল্ড লাস্কির কাছে। তার ফলে ইন্দিরা গান্ধী পৃথিবী খ্যাত রাষ্ট্রনেতা হতে পেরেছিলেন। আর আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সফল রাজনীতিক তো দূরের কথা একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী হয়েই কি পৃথিবী বিখ্যাত হবেন? দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে মিষগাইড করা থেকে রাজ্যের উচ্চ আদালতকে অমান্য করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন শাসকদলের নেতা কর্মীরা। এর ব্যাখ্যা পেতে হলে সেই মেকীয়াভেলির কাছেই যেতে হবে। যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শাস্তি দিতে পারবেন তাঁরা কিন্তু এখনো হীরক রাজার হীরে নিয়ে বিমোহিত বা মোহাচ্ছন্ন। ঠিক যেমনটি বলে গিয়েছেন ইতালির রাষ্ট্র দার্শনিক নিকলো মেকিয়াভেলী। মেকীয়াভেলি তাঁর ‘The Prince’ বইতে রাজা বা শাসককে পরামর্শ দিয়েছেন এই বলে, ‘সাধারণ মানুষ হোল হতচ্ছাড়া জীব, তাই তাঁদের কাছে হয়ে ওঠো খেকশিয়াল ও সিংহের  মতো’। পুনশ্চ: মনে করিয়ে দিই এই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির নজির ভূ-ভারতে নেই। দুর্নীতি প্রামানিত হলে শাসকের পদত্যাগ করাটা রাজধর্ম পালন করা হয় বলে অভিমত দিয়ে গিয়েছেন প্রাচ্যের মেকিয়াভেলী কৌটিল্য, কিন্তু আমাদের রজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের সেই জ্ঞানটুকু আছে বলে আমার মনে হয় না। দলের এক ডজন নেতা মন্ত্রী গারদে রয়েছেন তারপরও মানতে হবে তৃণমূল কংগ্রেস একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দল নয়? বিস্ময়কর ব্যাপার হলো দলের সৎ নেতা কর্মীরা দুর্নীতিগ্রস্ত নেতার বিরুদ্ধে বা দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ করছেন না কেন? তিনি প্রামন করুন তিনি এখনও সততার প্রতীক। সেই সৎ সাহস আছে মমতা বন্দোপাধ্যয়ের? প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি করে গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ঘোলাটে করে দিয়েছেন তিনি। আর জি কর কান্ড তারই ফলশ্রুতি।



নবীনতর পূর্বতন