মনসারাম কর, সাংবাদিক, ঘাটাল:(মো:৯৬৪৭১৮০৫৭২): দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে চালাতে হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। মাসের পর মাস ডিম সবজির বিল বকেয়া। দোকানে ধার রেখে, বাড়ির টাকা খরচ করে সেন্টার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন দিদিমানিরা। বকেয়া বিল না মিললে দেনার দায়ে আগষ্ট মাস থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের খাবারের সাথে ডিম সবজি দেওয়া বন্ধ করে দেবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ICDS কর্মী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ICDS সমিতি। বিভাগীয় দপ্তরেও এই কথা জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ICSD কর্মী সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদিকা তথা রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদিকা শুক্লা ঘোষ জানিয়েছেন, চলতি মাস ধরলে ডিম সবজির বকেয়া ৩ মাস হয়ে যাবে। দোকানদাররা আর ধার রাখতে চান না, তাঁরাও কথা শোনাচ্ছেন। কেউ কেউ টাকা ধার নিয়ে বা বাড়ির তহবিল থেকে বাজার খরচ চালাচ্ছেন, এভাবে তাঁরা আর দেনার বোঝা বইতে পারছেন না, তাই বকেয়া টাকা না পেলে সেন্টারে ডিম সবজি আর খাওয়াতে পারবেন না তাঁরা। সরকার থেকে যে চাল ডাল আসে সেই খাবারই দেবেন শিশুদের। রাজ্য সরকারের এই ব্যর্থতায় তাহলে কি জেলা ও রাজ্য জুড়ে ডিম সবজির পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা? এ প্রশ্নের উত্তরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রজেক্ট অফিসার পরিমল দাস জানিয়েছেন, ৩০ জুলাই এর মধ্যেই বকেয়া বিল দিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য থেকে অনিয়মিত ফান্ড আসে, তাই এই অবস্থা। কিন্তু এমনটা হবে কেন? যেখানে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয় জড়িয়ে রয়েছে সেখানের টাকা বকেয়া! পরিমলবাবু জানান, এটা সম্পূর্ণ রাজ্যের হাতে। তবে রাজ্য স্তরে কথা হয়েছে, ৩০ জুলাই এর মধ্যে টাকা দিয়ে দেবে। প্রসঙ্গত, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণিদের কথায় উঠে এসেছে আরও কয়েকটি বিষয়। এ বিষয়ে সংগঠনের নেত্রী শুক্লা ঘোষ বলেন, তাঁদের জন্য মোবাইল বরাদ্দ থাকলেও তা দেওয়া হয়না। নিজের মোবাইল থেকেই অনলাইনে সেন্টারের তথ্য লোড করতে হয়। এমনিতেই সারা মাসে কিঞ্চিতমাত্র সাম্মানিক পান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মত চুক্তিভিত্তিক কর্মিদের জন্য বর্ধিত বেতনের ওর্ডার তাঁদের জন্য লাগু হয়নি এখনো। সারা মাসে যেটুকু অর্থ পান তা থেকে আবার মোবাইল বিল ভরতে হয়। মোবাইল রিচার্জ বাবদ দপ্তর থেকে ১৬৬ টাকায় সারামাসের রিচার্জ হয়না। বছরে দুটি করে শাড়ি বরাদ্দ থাকলেও তাও দেওয়া হয় না কর্মীদের। ২৩ টাকার জ্বালানী খরচে প্রতিদিনের রান্না সম্ভব নয়। প্রতিটি সেন্টারের জন্য সাবান, হ্যান্ডওয়াস সহ আরো কিছু জিনিস সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে, তাও মেলেনা। তিনি বলেন, এর উপর বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির সময়ে তিন মাসের ডিম সবজির বিল বকেয়া। কিভাবে চলবে সেন্টার? এই সকল বিষয় নিয়ে দাবিপত্র পেশ করলেও সুরাহা মেলেনি। সেন্টার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আগে এই ধরনের সমস্যা হত না, কিন্তু গত দু'বছর ধরে অনিয়মিত বিল দেওয়া হয়। নবান্ন বা মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আলোকপাত করুন চান কর্মীরা। তবে বকেয়া বিল না মিললে আগষ্ট মাসের ১ তারিখ থেকে সেন্টারের খাবারে ডিম সবজি খাওয়াতে পারবেন না বলে ICDS কর্মী সংগঠন জানিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ঘাটাল বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট, তিনি বলেন, এই প্রজেক্টের জন্য কেন্দ্র থেকে টাকা আসে রাজ্যে, রাজ্য সরকার শিশু ও মায়েদের সেই বরাদ্দ টাকা অন্যখাতে খরচ না করলে এই অবস্থা হওয়ার কথা নয়। কেন্দ্রের বরাদ্দ তহবিল নয়ছয় না করলে ৩ মাসের বিল বকেয়া থাকবে কেন? বিধায়ক বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও মায়েদের জন্য ডিম সবজি বন্ধ হলে দিদিমণি এবং বঞ্চিত মা ও শিশুদের সাথে নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
এলাকার খবর আমাদের সরাসরি জানাতে ফোন বা WhatsApp করুন 9647180572 নম্বরে। নিচের লিঙ্কে টাচ করে ঘাটাল রিপাবলিক টিভি ডিজিটাল মিডিয়ার WhatasApp গ্রূপে যোগ দিন 👇
আরও খবর পেতে নিচের লিঙ্কে টাচ করে আমাদের ফেসবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন 👇