সাংবাদিকতার নজরে একটা ছোট অনুভূতি

মনসারাম কর, ঘাটাল: ছবিটি আমার নিজের মোবাইলে তোলা। স্থান বরদা-পালপুকুর রাস্তার পালপুকুর। তারিখ ২ নভেম্বর ২০২২, ঘাটাল যাওয়ার পথে হঠাৎ দেখি দুই পুলিশ অফিসার আর দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ার রাস্তার পাশের পথ নির্দেশক বোর্ডগুলিকে পরিষ্কার করছেন। সচারাচর এই ছবি আমার চোখে পড়েনি। সেদিন চোখে পড়তেই পকেট থেকে মোবাইল বের করে দৃশ্যটা ক্যামেরা বন্দি করতে কাল বিলম্ব করিনি। ক্যামেরা ফ্রেমে উঠে এল ঘাটালে সি.আই দেবাশীষ ঘোষ এবং সে সময়কার ওসি দেবাংশু ভৌমিক সহ দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার। ছবি তুলতে তুলতেই ওসি সাহেব মুচকি হেঁসে বললেন “এই যে বোর্ড গুলোতে ধূলোর মোটা স্পট পড়ে গিয়েছে, লেখা বোঝা যাচ্ছে না, নজরে পড়লো তাই দুই সিভিক ভাইকে নিয়ে একটু পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি, আর ওরা দুজন দেখছি পরিশ্রমি ছেলে তাই ভাবলাম সবাই মিলে একটু করেই দিই’। অপরদিকে ওই দুজন সিভিক তখন একটি ছেঁড়া কাপড় নিয়ে বোর্ডের উপর ঘষে ঘষে ধূলো পরিষ্কারে ব্যস্ত। পেশির উপর ভর করে একজন উপরে আর তার পিছনে আর একজন ঠেলা দিয়ে ধরে রয়েছেন। তাঁরা একটার পর একটা বোর্ডের ধূলো পরিষ্কার করে দিলেন। দুই পুলিশ অফিসার সহ দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারের মানবিক দিকটা আমার সেদিন ভালো লাগলো। কারণ তাঁরা ওই কাজটা করছিলেন মানবিকভাবে। আমারা হইত কিছু খারাপ ঘটলেই পুলিশ বা সিভিক ভলেন্টিয়ারদের খারাপ চোখে দেখি, তার চুলচেরা বিশ্লেষন করি, কিন্তু অনেক বিষয় থাকে যেগুলো পুলিশ মানবিকভাবে করে থাকেন বরাবর। আর কিছু বিষয় থাকে যেগুলো পুলিশ না চাইলেও তাঁদের করতে হয়, কারণ সেগুলো তাঁদের চাওয়ার উপর নির্ভর করে না। ক্যামেরা ফ্রেমে থাকা চারজনের প্রতি আমার ভালোবাসা রইল। হইত এই ধরণের অনেকেই রয়েছেন যাঁরা দায়িত্বের উর্দ্ধে উঠে পথনিরাপত্তা সহ মানবিকভাবে অনেক কাজ করে চলেন, তাঁদেরকেই কুর্ণিশ জানাই। তবে সেই সময় একটা কথা মনে হচ্ছিল দায়িত্ববান সিভিকরা প্রতিদিন যে সকল কাজ করে থাকেন বা দায়িত্ব পালন করেন তাঁদের মাসিক বেতনটা বাড়ানো দরকার, কারণ ওই অল্প বেতনে এজনের সারামাস চালানো সম্ভব নয়। পাশাপাশি কোনও সিভিক যদি ভোরের আলোয় চোলাই পাচারে যুক্ত থাকে বা নিজেকে বড় অফিসার ভাবে তার কাজের নিন্দা করি।




নবীনতর পূর্বতন