কেউ প্রেমে ব্যর্থ, কেউ পরকীয়ায় ফেঁসে, কেউ আর্থিক অনটন, আবার কেউ বেকারত্ব বা সাংসারিক কলহে ক্রমশ বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

কলমে: মনসারাম কর: সাংবাদিক, ঘাটাল: (M:9647180572)  কেউ প্রেমে ব্যর্থ, কেউ পরকীয়ায় ফেঁসে, কেউ বেকারত্বের জ্বালায়, কেউ আবার ঋণগ্রস্ত হয়ে, কেউবা জটিল রোগে ভুগে, আবার কেউ আর্থিক অনটনে অথবা সাংসারিক কলহে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে আত্মহত্যার বড় কারণ মানসিক অবসাদ। মনের মধ্যে প্রচুর হতাশা বা ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার (ম্যানিয়াজনিত বিষন্নতা বা মানসিক ব্যাধি) থাকলে মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়ে।  বাড়ে জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার মতো বিষন্নতা। বিজ্ঞানের হাত ধরে বর্তমানে মানুষ যতই যান্ত্রিক হচ্ছেন ততই  একাকিত্ব গ্রাস করছে মানুষকে। বাড়ছে উদ্বেগ, আকাঙ্খা, হিংসা, হতাশা। রয়েছে নিজেকে জাহির করার প্রবল চেষ্টা, ফলে  অজান্তেই জড়িয়ে পড়ছেন নানান সমস্যায়। সহিষ্ণুতা, ধৈয্যশীলতা  হারাচ্ছেন। ফলে একসময়ের স্বপ্নগুলো ভেঙে অন্ধকারে ডুবছে মন। ফলে জীবন স্রোতের বিপরীতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছেন একাধিক সমস্যায়, ফলস্বরুপ অবশেষে সমস্যা থেকে বের হতে না পেরে  আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকছে। এর সাথে যুক্ত রয়েছে আরও কয়েকটি মাত্রা, তার মধ্যে রয়েছে মাদকাশক্ত, উৎসৃঙ্খল জীবনযাপন, স্মার্ট ফোন, হানি ট্র্যাপ, টিভি সিরিয়াল, জুয়া লটারির স্রোতে ভেষে যাওয়া। পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর এক একটি জেলায় প্রায় শতাধিক মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। বাস্তবের ছোট খাটো সমস্যার সমাধান সূত্র বের করে নিজেকে স্বাভাবিক ছন্দে ধরে রাখার মত সহিষ্ণুতা হারাচ্ছে একাশ্রেণীর মানুষ। আত্মহত্যার তালিকায় রয়েছেন যুবক-যুবতী,গৃহবধু, গৃহকর্তা, বয়স্ক এবং কলেজ পড়ুয়া অল্পবয়সিরাও।  কিন্তু এই প্রবণতা থেকে বিরত থাকার উপায় ? প্রথমেই বলা ভালো আত্মহত্যাই এক মাত্র সমস্যা সমাধানের পথ নয় বরং নিজের সমস্যা অন্যদের ঘাড়ে বৃহৎ আকারে  চাপিয়া দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এই পথ থেকে নিজেকে সরিয়ে রখার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ধৈয্যশীলতা, বে-হিসেবী কাজ থেকে নিজেকে দুরে রাখা এবং উচিৎ-অনুচিৎ-আয়ত্ব বুঝে কোনও কাজ করা। মনে রাখতে হবে ভবিষ্যত না বুঝে কোনও কাজে বা বিষয়ে নিজেকে জড়ালে বিপদের আশঙ্কা থাকে। সর্বপরি অপ্রীতিকর কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে হতাশ না থেকে প্রয়োজনে ঘনিষ্ট শুভাকাঙ্খীদের সাথে তা শেয়ার করে সমাধান সুত্র বের করা যেতে পারে। তাহলেই সমাজে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে।   



নবীনতর পূর্বতন