বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরেই সারি সারি কাটা গাছ বাজেয়াপ্ত করলো বনদপ্তর

চিফ রিপোর্টার, ঘাটাল: অনুমতি না নিয়ে কাটা হয়েছিল সারি সারি গাছ। খড়ার পুরসভার নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি পুকুর পাড় থেকে সারিবদ্ধ গাছ কেটে তা বিক্রির অভিযোগ ওঠে খড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিমাই সাঁতরা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ পুরসভা থেকে মাত্র তিনটি গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে কাটা হয়েছে ছোট-বড় প্রায় ৭০ টি গাছ। এ বিষয়ে খড়ারের পুরপ্রধান সন্ন্যাসীচরণ দোলই জানান, পুরসভা থেকে তিনটি গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে ওই ব্যক্তি প্রায় ৭০ টির মত গাছ কেটেছেন।বিষয়টি জানার পরেই গত ৪ এপ্রিল বনদপ্তরে খবর দেন পুরপ্রধান সন্ন্যাসীবাবু। খবর পেয়ে ওই দিনেই ঘটনাস্থলে যান বনদপ্তরের সুলতাননগর রেঞ্জের অফিসার অসিত বরণ মুখোপ্যাধ্যায়। কিন্তু ওইদিন গাছগুলি বাজেয়াপ্ত না করায় বনদপ্তরের বিরুদ্ধে ‘সেটিংতত্ব’ তুলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক। বিজেপি বিধায়কসহ এলাকার বিরোধীদের অভিযোগ  শাসক ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই বনদপ্তর নিষ্ক্রিয়। তিনি আরও বলেন, এই কাজ যদি কোনও বিজেপি ঘনিষ্ঠ কেউ করতো তাহলে এক ঘন্টার মধ্যেই অতি তৎপরতা দেখাতো বনদপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসন। এ বিষয়ে বনদপ্তরের অফিসার অসিতবাবু জানান গাছগুলি সেদিনই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ,তবে কয়েকজন চাষির আপত্তির কারনে গাছগুলি জমির উপর দিয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়া সেদিন সম্ভব হয়নি। তবে তিনি বাজেয়াপ্ত করার কথা বললেও ওইদিন কোনো সিজার লিস্ট বা নোটিশ ধরাননি বলে জানা গেছে। তারপরেই শুরু হয় নানান জলঘোলা। গতকাল সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের ফোনাফুনি করতে থাকেন বিধায়ক নিজে। অবশেষে আজ শনিবার সারিবদ্ধ কাটা গাছগুলিকে বাজেয়াপ্ত করতে দেখা যায় বনদপ্তরকে।  উল্লেখ্য ,গতবছর জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাছ কাটার বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছিল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে। এ বিষয়ে দলীয় কর্মীদের তিনি কড়া ধমক দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন,দলীয় কোনও কর্মী এই ধরনের কাজে যুক্ত থাকলে দল তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও অবৈধভাবে গাছকাটার বিরুদ্ধে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছিলেন।  প্রসঙ্গত, অবৈধভাবে গাছ কাটা ও তা কেনাবেচার পেছনে একশ্রেণির মিল মালিকের হাত আছে বলে বিভিন্ন সূত্রের খবর। সব জেনেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বনদপ্তর নরম মনোভাব প্রকাশ করে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন সময়।
প্রসঙ্গত,  চলতি সপ্তাহের এক প্রশাসন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় নিচু তলায় যা ঘটে সব খবর তিনি রাখেন। অর্থাৎ দলীয় নেতৃত্ব ছাড়াও তাঁর বিশেষ বার্তাবহ ব্যক্তির মাধ্যমে নিচু তলার সব খবর তাঁর কাছে পোঁছে যায়। মুখ্যমন্ত্রী আগামী জেলা সফর বা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে ফের অবৈধ গাছ কাটা নিয়ে খোঁজ খবর নিতে পারেন বলে মত বিশেষ সূত্রের।



নবীনতর পূর্বতন